যে খাদ্য সকল রোগের মহৌষধ
মধু মানুষের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত এক অপূর্ব নেয়ামত। স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং যাবতীয় রোগ নিরাময়ে মধুর গুণ অপরিসীম। আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মধু খুব পছন্দ করেন এবং মধুকে তিনি ‘খাইরুদ্দাওয়া’ বা মহৌষধ বলে উল্লেখ করেছেন। তীব্বে নববী ও ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রেও মধুকে বলা হয় মহৌষধ। এটা যেমন বলদাযক, সুস্বাদু ও উত্তম উপাদেয় খাদ্যনির্যাস, তেমনি নিরাময়ের ব্যবস্থাপত্রও। আর তাই তো খাদ্য ও ওষুধ এ উভয়বিধ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ নির্যাসকে প্রাচীনকাল থেকেই পারিবারিকভাবে ‘পুষ্টিকর ও শক্তিবর্ধক’ পানীয় হিসেবে সব দেশের সব পর্যায়ের মানুষ অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে ব্যবহার করে আসছে।
মধু সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে- “হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দু’টি প্রতিষেধক গ্রহণ করো মধু এবং পবিত্র কুরআন শরীফ।” (ইবনে মাজাহ শরীফ: কিতাবুত ত্বিব: হাদীছ শরীফ নং ৩৪৫২)
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে- “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাল্ওয়া ও মধু পছন্দ করতেন।” (ইবনে মাজাহ শরীফ: কিতাবুল ত্ব‘য়ামাহ : হাদীছ শরীফ নং ৩৩২৩)
মধুর উপকারিতা:
নিয়মিত ও পরিমিত মধু সেবন করলে যেসব উপকার পাওয়া যায়। তা হলো- ১. হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। রক্তনালি প্রসারণের মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং হৃদপেশির কার্যক্রম বৃদ্ধি করে; ২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে; ৩. দাঁতকে পরিষ্কার ও শক্তিশালী করে; ৪. দৃষ্টিশক্তি ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে; ৫. মধুর রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষমতা, যা দেহকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে; ৬. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ও কোষকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে; ৭. তারুন বার্ধক্য অনেক দেরিতে আসে; ৮. মধুর ক্যালরি রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়, ফলে রক্তবর্ধক হয়; ৯. যারা রক্ত স্বল্পতায় বেশি ভোগে বিশেষ করে মহিলারা, তাদের জন্য নিয়মিত মধু সেবন অত্যন্ত ফলদায়ক; ১০. গ্লাইকোজেনের লেভেল সুনিয়ন্ত্রিত করে; ১১. আন্ত্রিক রোগে উপকারী। মধুকে এককভাবে ব্যবহার করলে পাকস্থলীর বিভিন্ন রোগের উপকার পাওয়া যায়; ১২. আলচার ও গ্যাস্ট্রিক রোগের জন্য উপকারী; ১৩. দুর্বল শিশুদের মুখের ভেতর পচনশীল ঘায়ের জন্য খুবই উপকারী; ১৪. শরীরের বিভিন্ন ধরনের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি করে; ১৫. ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ মধু স্নায়ু এবং মস্তিষ্কের কলা সুদৃঢ় করে; ১৬. মধুতে স্টার্চ ডাইজেস্টি এনজাইমস এবং মিনারেলস থাকায় চুল ও ত্বক ঠিক রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করে; ১৭. মধু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে; ১৮. ক্ষুধা, হজমশক্তি ও রুচি বৃদ্ধি করে; ১৯. রক্ত পরিশোধন করে; ২০. শরীর ও ফুসফুসকে শক্তিশালী করে; ২১. জিহ্বার জড়তা দূর করে; ২২. মধু মুখের দুর্গন্ধ দূর করে; ২৩. বাতের ব্যথা উপশম করে; ২৪. মাথা ব্যথা দূর করে; ২৫. শিশুদের দৈহিক গড়ন ও ওজন বৃদ্ধি করে; ২৬. গলা ব্যথা, কাশি-হাঁপানি এবং ঠাণ্ডা জনিত রোগে বিশেষ উপকার করে; ২৭. শিশুদের প্রতিদিন অল্প পরিমাণ মধু খাওয়ার অভ্যাস করলে তার ঠাণ্ডা, সর্দি-কাশি, জ্বর ইত্যাদি সহজে হয় না; ২৮. শারীরিক দুর্বলতা দূর করে এবং শক্তি-সামর্থ্য দীর্ঘস্থায়ী করে; ২৯. ব্যায়ামকারীদের শক্তি বাড়ায়; ৩০. মধু খাওয়ার সাথে সাথে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে, ফলে শরীর হয়ে উঠে সুস্থ, সতেজ এবং কর্মক্ষম। ৩১. সুন্নতী খাবার মধু প্রিজারভেটিভ হিসেবেও কাজ করে। ৩২. ক্ষত সারাতে সুন্নতী খাবার মধু ব্যবহার করা যায়। ৩৩. রূপচর্চায় বিভিন্ন ভাবে সুন্নতী খাবার মধুর ব্যবহার হয়। ব্রণ সারাতে, মুখের আদ্রতা বৃদ্ধিতে, মসৃণ করতে ইত্যাদি। ৩৪. সুন্নতী মধুর সাথে লেবুর শরবত শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে। ৩৫. শিশুদের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় ওষুধের চেয়ে সুন্নতী খাবার মধু অনেক বেশি কর্যকর।সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মধু খাওয়ার নিয়ম:
প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে খালি পেটে চা চামচের দুই চামচ করে মধু ডান হাতের তালুতে নিয়ে চেটে খেতে হবে।
পন্যের বিস্তারিত:
উৎস: সুন্দরবন
মধুর ধরন: খলিসা ফুলের মধু
বিশুদ্ধতা: ১০০% মিশ্রণমুক্ত
পরিমাণ: ১০০০গ্রাম
পাত্রের ধরন: প্লাস্টিক (ফয়েল কভার সিলড)